বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০১৬

ব্যাটল অব কারেন্ট


একটা প্রশ্ন করি তোমাদের। বলতো তোমরা কোন দলে, এসি কারেন্টের দলে নাকি ডিসি কারেন্টের দলে? শিরোনাম আর প্রশ্ন শুনে নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছো! ভাবছ এসি আর ডিসি মধ্যে আবার কিসের যুদ্ধ? বিদ্যুতের পেছনের ইতিহাস জানা না থাকলে তোমরা অবাকই হবে। ভাববে, এটা আবার কি ধরণের প্রশ্ন! বিদ্যুত নিয়ে খামোখা যুদ্ধ করার কি আছে! সে বিষয়ে পরে বলছি। তার আগে চল ডিসি এবং এসি সম্পর্কে একটু জেনে নিই। 

ডিসি এবং এসিঃ ডিসি মানে ডাইরেক্ট কারেন্ট (Direct Current)। ইলেকট্রিক চার্জের একদিকে প্রবাহের জন্যই একে ডিসি বলা হয়। যে কোন ব্যাটারি এবং সৌরকোষ থেকে যে ভোল্টেজ পাওয়া যায় সেটা ডিসি ভোল্টেজ। আর ডিসি ভোল্টেজ থেকে যে কারেন্ট আমরা পাই সেটাই ডিসি। উদাহরণ হিসেবে বলা ব্যাটারি চালিত টর্চলাইটে যে কারেন্ট দিয়ে আলো জ্বলে সেটা ডিসি। যদি আমরা সময়ের সাথে ভোল্টেজের একটা প্লট করি তাহলে নিচের চিত্রের মত দেখায়। T মানে সময় আর V মানে ভোল্ট। সময় যতই গড়াচ্ছে, ভোল্টেজ একই থাকছে। এটাই ডিসি ভোল্টেজ।

এবার ধরো, আমি ভোল্টেজটাকে একটু একটু করে কমিয়ে দিতে লাগলাম। এভাবে একসময় ভোল্টেজ ০ হয়ে গেল। না, তারপরও আমি থামলাম না আরো কমাতে লাগলাম, যাতে ভোল্টেজের মান নেগেটিভ হয়ে গেল। আরো কিছু কমানোর পর থামলাম, এবার আবার ভোল্টেজের মান বাড়াতে লাগলাম। বাড়তে বাড়তে আবার ভোল্টেজ ০ হয়ে গেলো। তারপরও থামি নি। আরো বাড়াতে লাগলাম ভোল্টেজ। সেটা এবার বেড়ে একসময় আগের অবস্থায় ফিরে গেল। এরকম করে যদি আমি ভোল্টেজের মান একবার বাড়াই আবার কমাতে থাকি তবে যে ভোল্টেজ পাওয়া যাবে সেটাই এসি ভোল্টেজ। এসি ভোল্টেজের কারেন্টই এসি। সময় এর সাথে ভোল্টেজের প্লট করলে নিচের মত করে দেখায়,

এসি মানে হলো অল্টারনেটিং কারেন্ট (Alternating Current)। যখন ইলেকট্রিক চার্জ পর্যায়ক্রমিকভাবে দিক পরিবর্তন করে তখন তাকে এসি বলে। বাসার টিভি, ফ্যান, লাইট, রাস্তার ধারের তারের ভোল্টেজ- সবকিছুই এসি ভোল্টেজ। এসি ভোল্টেজের জন্য যে কারেন্ট সেটাকে বলে এসি। এটাও ভোল্টেজের সাথে সাথে দিক পরিবর্তন করে। 

এসি-ডিসি যুদ্ধঃ 
আজ যে বাসাবাড়ি কিংবা শিল্প কারখানায় যে এসি সরবরাহ করা হয়, তার পেছনে রয়েছে এক যুদ্ধের ইতিহাস। যা "কারেন্ট যুদ্ধ" নামে পরিচিত। আর এই যুদ্ধ যাদের মধ্যে সংগঠিত হয়েছিল তাদের এক পক্ষ ছিলেন বিখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন, এবং অন্যপক্ষ ছিলেন ওয়েস্টিংহাউস ও টেসলা। এডিসন নেতৃত্ব দেন ডিসি’র পক্ষে, অন্যদিকে টেসলা-ওয়েস্টিংহাউস এসি’র পক্ষে লড়েন। 

চলো স্বপ্নের টাইম মেশিনে করে চলে যাই এসি-ডিসি যুদ্ধের যুগে। ১৩০- ১৪০ বছর আগে। টমাস আলভা এডিসন তখন পৃথিবীসেরা বিজ্ঞানী। একটার পর একটা আবিষ্কার করে চলছেন আর সমান তালে পয়সাও কামাচ্ছেন। সাধারণত বিজ্ঞানীরা ভালো ব্যবসায়ী হন না। কিন্তু এডিসন ব্যতিক্রম। তিনি ভালো বিজ্ঞানীর পাশাপাশি ভালো ব্যবসায়ীও। আজকের দিনে বাসা বাড়ীতে এসি সরবরাহ করা হলেও প্রথমে পরিস্থিতি কিন্তু ছিল অন্যরকম। ডিসি তখন সরবরাহ করা হত আমেরিকাতে। সে সময়টাতে কোন এসি-মটর আবিষ্কার হয় নি। ডিসি দিয়ে বৈদ্যুতিক বাতি, স্টোরেজ ব্যাটারী এবং ডিসি মটর চালানো হত। বৈদ্যুতিক বাতির থিওরিটাও ছিল বেশ সোজা, বাতির ভেতরের ফিলামেন্ট খুব বেশী গরম হয়ে যায় যদি কারেন্ট প্রবাহিত করা যায়। এই ফিলামেন্ট গরম হয়ে এরপর জ্বলতে থাকে। অর্থ্যাৎ বিদ্যুৎ শক্তি প্রথমে তাপ শক্তি এবং এর পরে আলোক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে থাকে। ডিসির প্রবক্তা এডিসন সাহেব নিজেই। তিনি তার এই ডিসি নেটওয়ার্ককে এগিয়ে নিতে থাকেন। এই ধারাবাহিকতায় ১৮৭৬ সালে টমাস আলভা এডিসন ডায়নামো এবং আরো কিছু ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্র পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নিউজার্সিতে একটি ল্যবরেটরি প্রতিষ্ঠা করেন। এর পরে ১৮৯০ সালে এডিসন প্রতিষ্ঠা করেন জেনারেল ইলেক্ট্রিক, যা আজকের পৃথিবী অন্যতম বৃহৎ মাল্টিন্যাশনাল বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। 

এডিসনের বৈদ্যুতিক বাতি খুব জনপ্রিয় হতে লাগলো। এই বৈদ্যুতিক বাতি চলে ডিসিতে। অচিরেই ডিসি’র জনপ্রিয়তা বেড়ে গেলো। সম্ভ্রান্ত পয়সাওয়ালাদের ছাড়িয়ে ধীরে ধীরে বৈদ্যুতিক বাতি পৌঁছে গেলো সাধারণের দ্বোরগোড়ায়। এডিসনও একের পর এক পাওয়ার প্ল্যান্ট ডিজাইন করতে থাকলেন। কিন্তু একটা সমস্যা দেখা দেয়। এই কারেন্ট বেশিদূর পাওয়ার ট্রান্সফার করতে পারে না। দুই কিলোমিটার যেতে না যেতেই ডিসি’র অবস্থা কাহিল। কাজেই, তার যারা ভোক্তা, তাদের সবার বাড়িঘরই পাওয়ার প্ল্যান্টের দুই কিলোমিটারের মধ্যে। ইলেকট্রিসিটি যখন তারের মধ্য দিয়ে যায়, তখন আস্তে আস্তে তার পাওয়ার লস হতে থাকে। ইঞ্জিনিয়ারিং এর ভাষায় একে বলা হয় লাইন লস। এই লাইন লস P=I2R সূত্র মেনে চলে। 

P মানে পাওয়ার,

I মানে কারেন্ট আর

R মানে রেজিস্ট্যান্স বা বাধা।
তার মানে, যে পরিমাণ কারেন্ট ফ্লো করবে, তার বর্গাকারে লাইন লস হবে। কারেন্ট ফ্লো যদি দুই গুণ বাড়ে, লাইন লস বাড়বে চার গুণ। কারেন্ট ফ্লো তিনগুণ বাড়লে লাইন লস নয়গুণ। এডিসন জানতেন, কোনভাবে যদি কারেন্টের ফ্লো-টা কমানো যায়- তাহলেই কাজ হবে। লাইন লস কমে যাবে। সেই সাথে দূরে বহুদূরে ইলেকট্রিসিটিও পাঠানো যাবে। কিন্তু তার মাথায় কোন সমাধান আসছিল না। এডিসন যখন সমাধানের খোঁজে মরিয়া তখন সমাধান নিয়ে এলেন টেসলা।
নিকোলা টেসলা। সার্বিয়ার বিজ্ঞানী টেসলা কাজ করতেন এডিসনের সাথে। তিনি ঘূর্নায়মান চৌম্বক ক্ষেত্রের উপর কাজ করতে গিয়ে এসি কারেন্টের দেখা পান। সাথে সাথে তিনি এসি কারেন্ট কি করে উৎপাদন, সরবরাহ এবং ব্যবহার করা যায় - সেটার উপরেও কাজ করেন। কিন্তু এডিসন টেলসার কাজকে যথাযথ মূল্যায়ন করেন নি। টেসলার এসি পাওয়ার ট্রান্সমিশনের আইডিয়া এক কথায় উড়িয়ে দিয়ে এডিসন বললেন, "আইডিয়া বেশ চমৎকার। তবে তা বাস্তবতার সাথে বেমানান।"

ইলেকট্রিসিটির একটা বেসিক সূত্র হচ্ছে,
P=VI, যেখানে P মানে পাওয়ার, V মানে ভোল্টেজ, আর I মানে কারেন্ট। 

টেসলা ভেবে দেখলেন, কোনভাবে ভোল্টেজ বাড়িয়ে দিয়ে, আর কারেন্ট কমিয়ে দিতে পারলে একই পাওয়ার বহুদূর পৌঁছাতে পারবেন। 

ব্যাপারটা তোমাদের একটু খুলে বলি। ধরো তুমি পাঠাতে চাচ্ছো ৫০০ ওয়াট। তো তুমি যদি ৫০ ভোল্ট উৎপন্ন কর, তাহলে তোমাকে পাঠাতে হবে ১০ অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট। কারণ, ৫০X১০=৫০০। ১০ অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট মানে কিন্তু অনেক কারেন্ট। লাইন লস হবে অনেক। এখন তুমি যদি কারেন্ট কমিয়ে ১ এ্যাম্পিয়ার করতে চাও, তাহলে তোমাকে উৎপন্ন করতে হবে ৫০০ ভোল্ট। কারণ, ৫০০X১=৫০০। তুমি একই পাওয়ার পাঠাচ্ছ অথচ লাইন লস কমে যাচ্ছে বহুগুণ। কিন্তু ভোল্টেজ চেঞ্জটা করবে কে?

এখন আমরা খুব করে জানি ট্রান্সফর্মার এই কাজটা করে। টেসলা দেখলেন, কাছাকাছি দুটো কয়েল রেখে একটা কয়েলে এসি ভোল্টেজ দিলে সেটা ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ইনডাকশনের’ মাধ্যমে অন্য কয়েলে ভোল্টেজ ‘ইনডিউস’ করে। এটা ফ্যারাডে’র সূত্র অনুসারে হয়। টেসলা গবেষণা করে দেখলেন এই ব্যাপারটা ডিসিতে কাজ করেনা। কাজ করে কেবলে এসি বা অল্টারনেটিং কারেন্টের ক্ষেত্রে। তার মানে দূর দূরান্তে ইলেকট্রিসিটি পাঠাতে হলে এসি কোন বিকল্প নেই। 

এডিসনের অবহেলা টেসলার মনঃকষ্টের কারণ হয়। চাকুরী ছেড়ে দিলেন তিনি এডিসনের কোম্পানী থেকে। টেসলার এই আবিষ্কার লুফে নিলেন ড. ওয়েস্টিংহাউস নামের একজন ব্যবসায়ী। তিনি নিজেও একজন একাডেমিশিয়ান ও বিজ্ঞানী। টেসলাকে পিটার্সবার্গে নিজের ল্যাবে কাজ করার সুযোগ দেন তিনি। এরপর শুধু এগিয়ে যাওয়া। উজ্জ্বল হয়ে যায় এসির ভবিষ্যত। ১৯৮৮ সালের মধ্যেই টেসলার সহায়তায় ওয়েস্টিংহাউস থ্রী ফেজ ৬০ হার্টয এসি কারেন্টের মোটামুটি একটি ডিজাইন চূড়ান্ত করে ফেললেন।

এডিসন টেসলার আবিষ্কারের গুরুত্ব বুঝেননি- এমনটা ভাবলে মনে হয় ঠিক হবেনা। তিনি ঠিকই বুঝেছিলেন। কিন্তু তার আগেই কেউ এই সমস্যার সমাধান করে ফেলেছে- এটা তার কাছে ছিল অবিশ্বাস্য। কাজেই, তিনি অল্টারনেটিং কারেন্টের বিরোধিতা করা শুরু করলেন। ব্যবসায়ী এবং বিজ্ঞানী হিসেবে তার ছিল যথেষ্ট প্রভাব। তিনি এই প্রভাব খাটিয়ে এসি’র বিরুদ্ধে প্রচারণায় নামলেন। শুরু হল এসি-ডিসি’র দ্বন্দ্ব। এসি’র খারাপ দিক বোঝানোর জন্য এডিসন একটা পরীক্ষা করলেন। এই পরীক্ষায় একটা কুকুরকে ১০০০ ভোল্ট ডিসি শক দেয়া হল। কুকুরটার কিছু হল না। এবার তাকে ৩০০ ভোল্টের এসি শক দেয়া হল। কুকুরটা মারা গেলো। এডিসন বুঝাতে চাইলেন, এসি কারেন্ট দুর্ঘটনা কত ভয়াবহ এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে। ডিসি সেদিক দিয়ে অনেক নিরাপদ। এইসব পরীক্ষা জনসম্মুখেই করা হত। ফাঁসির আসামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য এডিসন ইলেক্ট্রিক চেয়ার চালু করলেন। আসামীকে এই চেয়ারে বসিয়ে তার শরীরের ভেতর এসি কারেন্ট চালিয়ে দেয়া হত। পুরো ব্যাপারটি ছিল খুব নৃশংস ও ভয়াবহ। টেসলাকে সুযোগ করে দেয়া এসি’র উদ্যোক্তাকে ব্যঙ্গ করে এডিসন এই প্রক্রিয়াটির নাম দিলেন ‘ওয়েস্টিংহাউজড’। প্রভাব খাটিয়ে সরকারিভাবে এসিকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টাও করলেন তিনি। কিন্তু দূর দূরান্তের মানুষ ততদিনে এসি পাওয়ারে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। এসির গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বেড়েই চলছিল। কাজেই, এইসব পরীক্ষা করে লোককে ভয় দেখানো গেল না।

১৮৮৭ সালে এডিসন নিউজার্সিতে এক জনসমাবেশে ১০০০ ভোল্টের এসি জেনারেটর থেকে প্রস্তুতকৃত বিদ্যুতে স্পর্শ লাগিয়ে অনেক প্রানীকে বিদ্যুতায়িত করে হত্যা করেন। যা পরবর্তিতে "ইলেট্রোকিউশন" নামে পরিচিত হয়। এতে করে এসি কারেন্টের বিপদ তুলে ধরাই ছিল উদ্দেশ্য, যা ডিসি কারেন্টের ক্ষেত্রে নেই। জন নিরাপত্তাকে কারন দেখিয়ে এডিসন চেষ্টা করলেন ৮০০ ভোল্টের বেশী বিদ্যুৎ সরবরাহের বিরুদ্ধে আইন প্রনয়ন করতে। কিন্তু ব্যর্থ হলেন। ওয়েস্টিংহাউস সবাইকে আশ্বস্ত করলেন, বিপদজনক হলেও এসি তা মোকাবেলা করতে সক্ষম বিশেষত যেখানে এসির উপকারী দিকগুলো অনেক বেশী। তারপরও এডিসন থেমে থাকেন নি ৬৬০০ ভোল্ট এসি দিয়ে বিদ্যুতায়িত করে হত্যা করেন ৩ টন ওজনের এক হাতিকে। 

কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ডিসি টিকতে পারল না এসির সাথে। পরাজয় নিশ্চিত হয়ে যায় ১৯০০ সালের মধ্যে, যখন এডিসনের জেনারেল ইলেক্ট্রিক এসি উৎপাদন ও সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয়। সমাপ্তি ঘটে দশক ব্যাপী কারেন্ট যুদ্ধের। সেই থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন, পরিবহন, ডিস্ট্রিবিউশন, বাসা-বাড়িতে ব্যবহার ইত্যাদি দিক থেকে এসি ব্যবহারবান্ধব হওয়ায় এসব ক্ষেত্রে এসি ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে তার মানে এই নয় যে, এখন ডিসি’র ব্যবহার নেই। এখনো ডিসি ছাড়া অনেক কিছু হয়না। সব ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতিতে ডিসি ব্যবহার হয়। যেমন ল্যাপটপ, কম্পিউটার, মোবাইল, মাইক্রোকন্ট্রোলার ইত্যাদি। আবার এসি’র একটা বড় সমস্যা হলো এটা সংরক্ষন করা যায় না। সেক্ষেত্রে এসিকে ডিসিতে পরিবর্তন করে সংরক্ষন করা হয়। অতএব আমরা কারো পক্ষে কিংবা বিপক্ষে না। এসি এবং ডিসি উভয়েই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন