সোমবার, ৭ আগস্ট, ২০১৭

জ্যেতির মধ্যে জ্যোতি-Light Upon Light

সূর্য যে তার নিজের আলো বিকিরণ করে তা ছোটবেলা থেকে আমরা জেনে এসেছি। আসলে সূর্যের এই আলো তার নিজস্ব আলো নয়। শুধু সূর্য় নয়, এই মহাবিশ্বে(Univers) যা কিছু আছে তার কারই নিজস্ব কোন মৌলিক শক্তি নেই। কেবল আছে শক্তি বিকিরণের, পরিবহন আদান প্রদানের ক্ষমতা। মহাবিশ্বের যে চারটি মৌলিক শক্তি, বিদ্যুৎ-চৌম্বকীয় শক্তি, দুর্বল পারমানবিক শক্তি, শক্তিশালী পারমানবিক শক্তি আর মহাকর্ষ বল তা যে মৌলিক শক্তি, ঠিক তা নয়। এই সব শক্তিকে কার্যকারী বা সচল রাখতে অন্য শক্তির প্রয়োজন হয়।


এই সব সকল শক্তিকে মুলত কার্যকর করে একটি মৌলিক শক্তি, যা আল্লাহ তায়ালার জ্যোতি। আল কুরআনের সূরা নূরের ৩৫ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে
আল্লাহ নভোমন্ডল ভূমন্ডলের জ্যোতি

আল্লাহর জ্যোতি মুলত স্থান কাল(space and time) তৈরী করে। অথ্যাৎ এই জ্যোতি বা আলো যতদুর পর্যন্ত বিস্তৃত স্থানের কাঠামো(Fabrics of Space) ততদুর পর্যন্ত বিস্তৃত।

নিউটনের Genearl Scholium গ্রন্থে বলা হয় স্থান হল শক্তিময় একটি ক্ষেত্র যা মুলত বস্তুকে ধারন সৃষ্টি করে। স্থান ছাড়া কোন বস্তুর অস্থিত্য অসম্ভর।
এই মহাবিশ্বে যত শক্তির উৎস আছে তা মুলত আল্লাহর এই জ্যোতি থেকে প্রাপ্ত।


এই জ্যোতির বর্ননা দিতে কুরআনে বলা হয়েছে

আল্লাহ নভোমন্ডল ভূমন্ডলের জ্যোতি, তাঁর জ্যোতির উদাহরণ যেন একটি কুলঙ্গি, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচপাত্রে স্থাপিত, কাঁচপাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ্য। তাতে পুতঃপবিত্র যয়তুন বৃক্ষের তৈল প্রজ্বলিত হয়, যা পূর্বমুখী নয় এবং পশ্চিমমুখীও নয়। অগ্নি 
স্পর্শ না করলেও তার তৈল যেন আলোকিত হওয়ার নিকটবর্তী। জ্যোতির উপর জ্যোতি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ দেখান তাঁর জ্যোতির দিকে। আল্লাহ মানুষের জন্যে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন এবং আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।

এই আয়তে এমন কিছু বিষয়ের ইংগিত আছে যা জ্যোতিবিজ্ঞানের অনেক অমিমাংসিত বিষয়ের সমাধান।

মহাবিশ্বের অসংখ্য নক্ষত্র কে এখানে কাচের আবরণের সাথে তুলনা করা হয়েছে, যখনি এর মধ্যদিয়ে আল্লাহর জ্যোতি প্রবেশ করে তখন ইহার ভিতরে থাকা জ্বালানি জ্বলতে থাকে আর দৃশ্যমান আলো বিতরণ করে। 
মজার ব্যপার হল, আমাদের দৃশ্যমান আলো তাপ যুক্ত কিন্তু আল্লাহর নুর বা জ্যোতি শীতল কোন পদাথের মধ্য দিয়ে ভেদ করে গেলেও কোন তাপ উৎপাদন করেনা। এই কারনেই মহাবিশ্বের পরম তাপমাত্রা হিমাংকের কাছাকাছি আর অসংখ্য নক্ষত্র তাপ বিকিরণ করলেও মহাবিশ্বের তাপমাত্রার কোন পরিবর্ত হয়না। এই শীতল আলোকেই জয়তুনের সাথে তুলনা করেছেন।




মুলত আল্লাহর জ্যোতি সকল পদার্থ ভেদ করার সময় পদার্থের গুন অনুসরে প্রত্যকেই তার উপজাত শক্তি যোগায় দিয়ে থাকে। অথ্যৎ যে পদার্থের যেমন শক্তি প্রয়োজন।

আল্লাহর এই জ্যোতি নিদৃষ্ট কোন দিক থেকে আগত বা নির্গত নয়। এটা পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিন নয়। আল্লাহর জ্যোতি সুষম ভাবে চারদিকে প্রবাহিত।
জ্যেতির মধ্যে জ্যোতি(Light Upon Light) বলতে আল্লহর যে জ্যেতি আমাদের মাঝে জ্বালিয়ে রেখেছেন তার বিভিন্ন স্তরের কথা বলেছেন।



মুলত আলোর বিভিন্ন স্তর রয়েছে, একেক স্তরের গুনাগুন আর বৈশিষ্ট একেক রকম। এক প্রকার আলোই শুধু আমাদের দৃশ্যমান হয়, এই দৃশ্যমান আলোও আসলে মুল জ্যোতি নয় আল্লাহর জ্যোতির উপজাত।


1 টি মন্তব্য: